সৈয়দ মোফাজ্জল আলী ,ওসমানীনগর প্রতিনিধি: ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় গত দেড় দশকে যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।কয়েক দফা বন্যায় উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ককের প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়নি। বিগত বছর গুলোতে বন্যায় উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। বন্যা পরবর্তী সময় এসব সড়কে বিটুমিন উঠে বড়-বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়।এসব সড়ক সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ভাঙ্গাচুরা সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষকে।একাধিক সড়কের সেতু-কালভার্টের অ্যাপ্রোচ ভেঙে পড়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন।ভাঙাচুড়া রাস্তার প্রয়োজনীয় সংস্কারে উদ্যোগী না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার জনসাধারন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন ৬৬২ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে।পাকা-আরসিসি মিলিয়ে
সড়কের দৈর্ঘ্য ২০৫ কিলোমিটার।কাচাঁ সড়ক রয়েছে ৪১৩ কিলোমিটার। যার মধ্যে ২০২২ সালের বন্যায় ৯২ ভাগ সড়ক ও ১১টি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৎকালিন সময়ে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ৩৪৯টি সড়কের মধ্যে ৩২০টি সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। সংস্কারে সাড়ে ৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হলেও বরাদ্দ না থাকায় সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। এসব সড়কের বেশির ভাগ অংশে যান চলালচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ভোগান্তির পর স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ১৪ কিলোমিটার বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কের ওসমানীনগর অংশে সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংস্কার হলেও ২০২৪ সালের বন্যায় এই সড়ক আবার ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপজেলার ৬৬২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে দুই দফা বন্যায় প্রায় ৫শ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রায় ৪শ কিলোমিটার সড়ক। সংম্লিস্টরা জানিয়েছেন পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় এসব সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা যাচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙাচুড়া এসব রাস্তায় যান চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন। আহত হয়ে পুঙ্গত্ব বরণ করছেন কেউ-কেউ। সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি সড়ক পরিদর্শন করে দেখা গেছে, উনিশ মাইল থেকে হলিম্পুর, কাগজপুর থেকে হলিমপুর বাজার যাওয়ার রাস্তা, দয়ামীর-দেওয়ানবাজার-থানাগাঁও, দয়ামীর-ঘোষগাঁও
রাস্তাগুলো কয়েক দফা বন্যায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়। এছাড়া গোয়ালাবাজার করনসী-জহিরপুর-নগরীকাপন, উমরপুরবাজার-মান্দারুকা, খাদিমপুর-কামালপুর-জয়দা, সৈয়দপুর-মাধবপুর, মাটিহানী-হিজলশাহ, তাজপুর-মঙ্গলচন্ডী বাজার, কাশিপাড়া-রঙ্গিয়া, সাদীপুর-খসররুপুর-প্রেমবাজার, পৈলনপুর-হাজীপুর-কিয়ামপুর, বুরুঙ্গাবাজার-জামতলা, উসমানপুর-মাদারবাজার, খালেরমুখ-ধনপুর ছাড়া ও মহাসড়কের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী সড়কসহ এলজিইডির আওতাধিন ৪ শতাধিক সড়ক ভাঙাচুড়া আর বেহাল দশায় রয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা এম ইলিয়াস আলীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ ময়নুল হক বলেন, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এম ইলিয়াস আলীকে পূর্বাকার আওয়ামী লীগ সরকার গুম করে রাখায় ওসমানীনগরে রাস্তাঘাটের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের মানুষ যদি তাহসিনা রুশদির লুনা ম্যাডামকে এমপি নির্বাচিত করেন তাহলে ওসমানীনগরের রাস্তাঘাটের দুরবস্থা আর থাকবে না। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী এস এম আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, কয়েক দফার বন্যায় ওসমানীনগরে পাকা সড়কের ৮০ শতাংশ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তুলনায় চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ায় সকল সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহন করা যাচ্ছে না।পর্যাপ্ত বরাদ্দ পেলে উপজেলার সকল সড়ক পর্যাক্রমে সংস্কার করা হবে।