এম এইচ চৌধুরীঃ দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনতে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেন “মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি” এতে উপস্থিত ছিলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ফারুক ফয়সাল, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও ব্রতীর চেয়ারম্যান শারমিন মুরশিদ, অধ্যাপক ড,আনু মোহাম্মদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি ড,বদিউল আলম মজুমদার, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড,শাহেদীন মালিক, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও নারীপক্ষের নেত্রী শিরিন হক, বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী ড,শহিদুল আলম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সরকার দলীয় নেতাকর্মী এবং পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দ প্রশাসন কর্তৃক গণহারে হামলা,মামলা ও গ্রেফতারের কারণে একপক্ষীয় নির্বাচনের পথে এগিয়ে নেওয়া চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, এটি কোন সভ্য দেশের সরকার করতে পারেনা।বিএনপির রাজনীতি করার কারণে ছেলে’কে না পেয়ে বাবা’কে হত্যা, জামায়াতের রাজনীতি করার কারণে ডাক্তার’কে চেম্বার থেকে তুলে নিয়ে দিন দুপুরে হত্যা। বিরোধী মত পোষণ করায় বাড়ি ছাড়া এটা কেমন রাজনীতি??। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এতো ভিতু হয়েছে তার দলের লোকজন লাঠিসোঁটা, অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য রাস্তা বসে শান্তির কবিতা শুনায়। আসলেই কি শান্তি আসবে নাকি শান্তির নামে অশান্তি বাড়বে এটা অনুধাবন করার বিষয়। আসক চেয়ারম্যান ফারুক ফয়সাল বলেন, জনগণের অধিকার হনন করে দমন নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে ক্ষমতায় থাকা যাবে,কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবেনা। নারীপক্ষের নেত্রী শিরিন হক বলেন, আমরা খুবই বিব্রতবোধ করছি এবং একটা অজানা উৎকন্ঠায় দিন পার করছি। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি কোন সরকার। কোন না কোন পক্ষ অন্যায়ের কাছে হেরে যাচ্ছে দিনের পর দিন। অধ্যাপক ড, আনু মোহাম্মদ বলেন,সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুন্দর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি চাইলে সবকিছু সম্ভব, কিন্তু তিনি করবেন কি না সেটা সন্দিহান। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড,শাহেদীন মালিক বলেন, সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দমন করতে পুলিশ প্রশাসন’কে এক তরফা ব্যবহার করছে।আসামিদের মতো বিচার বিভাগে কর্মরত আইনজীবীদের ও হয়রানি করছে আদালতে। আইনজীবী হিসেবে পরিচয় পত্র থাকার পরও রেহাই পাচ্ছেনা সহকর্মীরা যা সংবিধান পরিপন্থী। বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচনী আইন অনুসারে পূর্ণ তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণের সুযোগ করে একটি নিরপেক্ষ সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব তবে নির্বাচন কমিশনের সৎ সাহস থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন। বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও ব্রতীর চেয়ারম্যান শারমিন মুরশিদ বলেন,সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে জনগণের কণ্ঠরোধ করে নির্বাচন করলে সেই নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা বিবেচ্য বিষয়। নতুন প্রজন্ম’কে আমরা যতটুকু নির্বাচন মূখি করতে সক্ষম হয়নি তার কয়েকগুন পিছিয়ে নিতে উৎসাহিত করেছি। এমন বর্বর পরিস্থিতিতে ভোট দিবে কে?? প্রশ্ন রেখে বলেন,আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সকল দলের অংশগ্রহণ আশা করি তবে পরিবেশ তৈরি করতে হবে নির্বাচন কমিশন’কে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত শতাধিক সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সামাজিক আন্দোলন কর্মী, চিকিৎসক, শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী সহ সকলের পরামর্শ ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা করার সুযোগ করে দেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুজন এর সভাপতি ড,বদিউল আলম মজুমদার, এসময় তিনি বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, আমরা সকলেই মিলে আগামীর বাংলাদেশ। সকল দলের অংশগ্রহণ মুলক জাতীয় নির্বাচন আমাদের প্রত্যাশা, এই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে নির্বাচন কমিশন’কে। যদু মধু রাম সাম দিয়ে লোক দেখানো প্রহসন মুলক জাতীয় নির্বাচন আমাদের কাম্য নয়। প্রয়োজনে পুনরায় তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দল’কে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।