দ্বীপক চন্দ্র সরকার: নারী তুমি এগিয়ে চলো দৃঢ় প্রত্যয়ে এই পৃথিবী তোমার অপেক্ষায় এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের বিশ্ব নারী দিবসে বিশেষ সাক্ষাতকারে তিনি বলেন নারী শব্দটি উচ্চারিত যখন হয় তখন চোখের সামনে ভেষে উঠে গর্ভধারীনির প্রতিচ্ছবি তাই নারী শব্দটি অত্যান্ত শ্রদ্ধা ও সম্মানের নারী কখনো মা, কখনো স্ত্রী, কখনো কন্যা, কখনো বোন, শক্তি ও সাহসের এক সুনিপুন ব্যাক্তিত্বের বহিঃপ্রকার এই নারী জাতি। কবি নজরুল বলেগিয়েছেন সেদিন দুরে নয় যেদন ধরনী পুরুষের সাথে গাহিবে নারী ও জয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রতিটি পর্যায়ে নারী সমতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। সেই সাথে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা তাদের দক্ষতার প্রমান রাখছে তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ নারী পুলিশ। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্ঠা সর্বকালের সর্বশেষ্ট বাঙ্গালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সুদূও প্রসারী উদ্যোগে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ পুলিশের নারীরা যোগদান করেন। তারপর থেকেই বাংলাদেশ পুলিশের গতিকে নারীরা আরো বেগবান কেও তুলেছেন। এই উদ্দীপনার ঢেউ সাহস এবং প্রয়্যয় হয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরনা দেয়। কালের বিবর্তনে নারী পুলিশের কাজের ধরন তাদের অবস্থান চিন্তা চেতনায় এসেছে নানান পরিবর্তন। পুলিশের পোষাকে নারী আজ যেন শক্তির উজ্জ্বল প্রতীক। এই পোষাকের সম্মান ও দেশ মাতৃকার সম্মান রক্ষার্থে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার নেত্রকোণায় কর্মরত কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) জান্নাত আফরোজ নিরলশ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। জান্নাত আফরোজ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ হতে মাধ্যমিক ও উচ্ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক ও স্নাকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। স্নাতক শেষ করে তিনি ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন এবং সাফল্যেও সাথে পুলিশ ক্যাডােও সুপারিশপ্রাপ্ত হোন। চাকুরী জীবনের শুরুতে তিনি নরসিংদী জেলার স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এস বি ) ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রেপিড একশ্যান ব্যাটালিয়ান (র্যাব), পুলিশ হেড কোয়ার্টাস এ কর্মরত ছিলেন, তিনি জাতী সংগ শান্তিরক্ষা মিশনে ২০১৪—২০১৫ সালে হাইতি এবং ২০১৬ — ২০১৭ সালে কঙ্গোতে দুইটি শান্তি মিশন সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। শান্তি মিশন শেষে তিনি র্যাব—৫ এ এ্যাডমিন অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন ২০১৯ সালে তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নোতি পেয়ে নেত্রকোণা ইন সার্ভিস ট্রেনিঙ সেন্টারে কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর হতে অত্যান্ত বিচক্ষনতা ও দক্ষতার সহিত নেত্রকোণা কিশোরগঞ্জ এবং নরসিংদী এই তিন জেলার পুলিশ সদস্যদের কার্যকর প্রশিক্ষণ ও পেশাদারী সেবা প্রদান করে আসছেন্। ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার নেত্রকোণা নিয়মিত ভাবে নারী ও শিশু বয়স্ক ও প্রতিবন্দী সার্ভিস ডেক্স মানবাধিকার জেন্ডার সচেতনতা এবং সামাজিক দায়িত্ব কোর্স জুনিয়র লিডারশীপ কোর্স, অবিস ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বৃদ্ধি কোর্স, মানবপাচার ও প্রতিরোধ বিষয়ক কোর্স এবং শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা কোর্স, সমূহ তার নেতৃত্বে দক্ষতার সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার নেত্রকোণা এর কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার জান্নাত আফরোজ আরো বলেন নারীদের পুলিশে যোগদান নিয়ে একসময় নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ছিল। কিন্তু বর্তমানে নারী পুলিশ সদস্যদের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পরেছে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে নারী পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। জাতীয় জরুরী সেবা (৯৯৯) সার্ভিস, সাইভার ক্রাইম ও জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক কাজগুলো দেশমাতৃকার তরে নির্ভিকচিত্তে কাজ করেে যাচ্ছেন। পুরুসতান্ত্রিক সমাজে নারী নির্যাতন, নারী পাচার, বাল্য বিয়ে, এক তরফা তালাকের ক্ষেত্রে দেনমোহর আদায়, যৌতুক সহ নানাবিদ সামাজিক সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ নারী পুলিশ বেশ সোচ্চার। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, পরিচালনা করছেন বর্তমান নারী পুলিশ সদস্যরা। তিনি আরো বলেন বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীতে নারীদের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে জাতীসংগ মিশনে প্রচুর নারী পুলিশ সদস্যের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঠাচ্ছেন। সেখানে নারী পুলিশ সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝুকিপুর্ অভিযান পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম কুরাচ্ছেন। তিনি আশাবাদ বেক্ত করেন যে, উন্নয়নের এই ধারা অব্যহত থাকলে নারী পুলিশ সামনের আরো পেশাদার ও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।