1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
সিলেটে অপরাধের পাপ রাজত্ব শাপলা হলিডে - Bikal barta
৪ঠা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| রবিবার| বিকাল ৫:২৯|

সিলেটে অপরাধের পাপ রাজত্ব শাপলা হলিডে

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় রবিবার, মে ৪, ২০২৫,
  • 36 জন দেখেছেন

 

বিকাল বার্তা ডেস্ক>>

সিলেটে নেশায় বুঁদ থাকা তরুণীদের দিয়ে ফাঁদ পাততো নানা ভাই ফয়জুল খান আলম। অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে করতো ব্ল্যাকমেইল। একবার তার ফাঁদে কেউ পা দিলে মাসে মাসে দিতে হতো বড় অঙ্কের চাঁদা। টাকা না দিলে ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হতো। সিলেটের শাপলা হলিডে হোমে এভাবেই ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদ পেতে রাখে আলম। সবাই তাকে নানা ভাই বলে চিনেন। আর এই নানা ভাই বলার কারণও আছে। শাপলায় যাওয়া তরুণীরাই তাকে নানা ভাই বলে ডাকেন। এজন্য অনেকের কাছে সে এখন নানা ভাই। পাওনা টাকা নিয়ে গোলাপগঞ্জের কায়স্থগ্রামের মুহিনুর রহমান ও তার বন্ধু ব্যবসায়ী আসাদের ওপর হামলার ঘটনায় শাপলার কুকীর্তির নানা ঘটনা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক রয়েছে আলম। তার তরুণী সিন্ডিকেটরাও গা-ঢাকা দিয়েছে। শাপলার কুকীর্তি প্রকাশ হওয়ার পর পুলিশও সক্রিয় হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে এ হলিডে হোমে। তবে আলম কিংবা তার সিন্ডিকেটের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

পুলিশ বলছে, আলম ও তার সহযোগীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। আলমের মূল বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার দত্তরাই গ্রামে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৫-৬ বছর আগে শাপলার মূল মালিক লন্ডন প্রবাসীর কাছ থেকে বিল্ডিং ভাড়া নেয়। প্রথম তিনতলাকে সে রিসোর্ট হিসেবে ব্যবহার করে। আর উপরের দুইতলায় ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া দিয়েছে। আর দুইতলা পরিবার সহ ফ্ল্যাটবাড়ি ভাড়া দিয়ে সে নিচের তিনতলাকে অপকর্মের হেডকোয়ার্টার হিসেবে গড়ে তোলে। প্রথমে বিষয়টি বড়শালা এলাকার মানুষ বুঝতে পারেননি। পরে ধীরে ধীরে তাদের কাছে সব পরিষ্কার হয়।

 

বড়শালা এলাকার কয়েকজন স্থায়ী বাসিন্দা জানিয়েছেন, শাপলায় নানা কীর্তি হয়। অনেক বড় বড় ভিআইপি রাত-বিরাতে সেখানে ছুটে আসায় বিষয়টি ধরা পড়ে। আসে সুন্দর সুন্দর রমণীরা। বিশেষ করে থার্টিফার্স্ট নাইট, পহেলা বৈশাখে শাপলায় জমকালো আয়োজন হয়েছে। রাতভর সেখানে নাচ-গানের আসর ছিল। এলাকার লোকজন সব বুঝলেও মুখ বুঝে সহে গেছেন। কী হতো শাপলায় এমন প্রশ্নের জবাবে আলমের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হওয়া কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, শাপলা হচ্ছে অসামাজিক কাজের হেডকোয়ার্টার। যা চাইবেন সেখানে সব পাবেন। আলমই সব ব্যবস্থা করে দেয়। তার কাছে নগরের ১০ থেকে ১২ জন তরুণীর ফোন নম্বর রয়েছে। এসব তরুণীদের বেশির ভাগেরই বাড়ি সিলেটের বাইরে। তারা কলেজ ভার্সিটির পড়ার সুবাদে সিলেটে বসবাস করে। নানা ভাইয়ের ফোন পেলেই তারা ছুটে আসে। এরপর অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। আর চতুর আলম হোটেলে আসা লোকজন ও তরুণীদের ভিডিও ও ছবি ধারণ করে রাখে। পরে এসব ভিডিও ছবি দিয়ে ওই হোটেলে আসা লোকজনকে ব্ল্যাকমেইল করে। চায় টাকা। আলমের মোবাইল ফোনে এ ধরনের অনেক ভিডিও ও ছবি রয়েছে।

 

গত ১৫ই এপ্রিল শাপলা হলিডে হোমে হামলার শিকার হওয়া মুহিনুর রহমান জানিয়েছেন, যখন তাকে রিসোর্টে একটি রুমে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছিল তখন ওই সব ছবি তাকে দেখায় আলম ও তার ভাই তাজুল। ওই সময় তারা জানিয়েছিল, সবাই তার কাছে জিম্মি। তাদের উপর লেবেলে হাত রয়েছে। তাকে কেউ ছুঁতে পারবে না। মুহিন জানান, আলম নিজেই নেশাগ্রস্ত। সে তার রিসোর্টে নিয়ে তরুণীদের ইয়াবা ও মদ সেবন করায়। এরপর তাদের নেশায় আসক্ত করে তাদের ছবি ধারণ করে রাখে। এ ছাড়া অশ্লীল ছবিও রাখে। পরে ওই ছবি দিয়ে তরুণীদেরও সে ব্ল্যাকমেইল করে। কয়েকজন তরুণী তার কাছে এভাবে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। আলমের ডাকে না গেলে তাদেরও দেয়া হয় হুমকি। এতে করে তরুণীরাও বিপর্যস্ত। তাদের নেশায় আসক্ত করে সে রিসোর্টে আসা লোকজনের কাছে তাদের পাঠায়। তিনি জানান, তরুণীদের নিয়ে আলমের নেশা করা, অসামাজিক কাজে ব্যবসা করার অনেক ভিডিও ও ছবি বিভিন্নজনের কাছে রয়েছে। লোকজনের মোবাইল ফোনে সে এসব পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে। ঘটনার পর বিভিন্ন তরফ থেকে আলমের আক্রোশের শিকার হওয়া অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ব্ল্যাকমেইলে শিকার হওয়া এক ব্যবসায়ী জানান, আলম তথা নানা ভাইয়ের ডেরায় মাদক ছিল ওপেন সিক্রেট। নগরের জান্নাত, বৃষ্টি, তানিয়া ও ইমা সহ বিভিন্ন নামের তরুণীরা নিয়মিত আসতো। এর বাইরে ঢাকা থেকে কলগার্ল আনা হতো। ঢাকার নাটক ও চলচ্চিত্র পাড়ার অনেক নায়িকাও তার ডাকে সাড়া দিয়ে আসতো। ফলে সিলেটের ভিআইপি অনেকেই তার কাছে ছুটে যেতেন। হাই অফিসিয়ালরা যেতেন। এ ছাড়া জাফলং, ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বড় বড় ব্যবসায়ীরা নিয়মিত যাতায়াত করতেন। তার ছোট ভাই ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ ক্যাডার তাজুলকে দিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রাখে। তাজুল হচ্ছে সিলেটের আলোচিত ক্যাডার পীযূষের সহযোগী। এয়ারপোর্ট রুটের পর্যটন মোটেলে ঢোকার পথেই শাপলা হলিডে হোম। উল্টো দিকে পর্যটনের বার। ওই বারের নিচে তাজুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিনে ও রাতে বসে আড্ডা দিতো।

 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মুহিনের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে নিয়মিত পুলিশ আসতো রিসোর্টে। তল্লাশি করছে। এ কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছে নানা ভাই আলম। ক’দিন ধরে এলাকা ছাড়া রয়েছে তাজুল ও সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে করে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। তারা জানান, শাপলা হলিডে হোমের নানা কর্মকাণ্ড প্রকাশ পাওয়ার পর ফ্ল্যাট বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাসকারীরাও ছেড়ে যাচ্ছেন। আলমের কর্মকাণ্ডে তাদের মধ্যে ভয় ঢোকার কারণে তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!