সিলেট প্রতিনিধি >
হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৮ ও ১৯ মে। ওরসকে কেন্দ্রকরে মাজার প্রাঙ্গনে অনৈসলামিক কাজ বন্ধে পুলিশ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী, আলেমসমাজ ও মাজার কমিটির সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে সিলেট মেট্রোলিটন পুলিশ কমিশনার (এসএমপি) কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসএমপি কমিশনার মো. রেজাউল করিম (পিপিএম-সেবা)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শাহজালাল মাজার কমিটি, শাহজালাল (রহ.) তাওহিদি কাফেলা ও সিলেট মহানগর কওমি মাদরাসা ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও প্রশাসনিক দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিতে ছিলেন। কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সূচিত সভায় মাজার কর্তৃপক্ষ আসন্ন ওরসের কার্যক্রম তুলে ধরেন। এসময় তারা বলেন- অন্যান্যবারের মতো এবার গান-বাজনা হবে না, বসবে না মদ-গাঁজার আসর, থাকবে না আসর বসানোর তাবু। এবারের ওরস শিরক-বিদাআতমুক্ত রাখার পরিবেশ চেষ্টা করা হবে। এ বিষয়ে সম্প্রতি আমাদের নিজেদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে বক্তৃতাকালে মাজার কমিটি বিভিন্ন অপরাগতার কথাও তুলে ধরেন। তারা বলেন- দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তবৃন্দ আসেন শাহাজালাল মাজারের ওরসে। এদের সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না।
মাজার কমিটির এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওরসে অনৈসলামিক-অসামাজিক কাজ বন্ধে শাহজালাল (র.) তাওহিদি কাফেলার পক্ষ থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশ করা হয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রশাসন ও আলেমসমাজসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধি নিয়ে একটি তদারকি কমিটি গঠন, মাজার কমিটির পক্ষ থেকে শিরক-বিদাআত প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও ইবাগত-জিয়ারতের পরিবেশ তৈরি করা।
সভায় শাহজালাল (র.) তাওহিদি কাফেলার প্রত্যেকটি প্রস্তাব যৌক্তিক এবং সুন্দর বলে স্বীকার করেন মাজার কমিটি। প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে তারা সহযোগিতা করবেন বলেও আশ্বাস দেন। পরে সবার সম্মতিক্রমে এসএমপি কমিশনার ‘ওরস উদযাপনে শৃঙ্খলা রক্ষা তদারকি কমিটি’ গঠন করে দেন। এ কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন এসএমপি কমিশনার মো. রেজাউল করিম। কমিটিতে রয়েছেন- সেনাবাহিনী, র্যাব-৯, শাহজালাল (র.) তাওহিদি কাফেলা, মাজার কমিটি, শাহজালাল মসজিদ কমিটি, দরগাহ মাদরাসা কমিটি, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, জেলা সিভিল সার্জন, সিলেট প্রেসক্লাব, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও মহানগর কওমি মাদরাসা ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিবৃন্দ।
সুশৃঙ্খলভাবে ওরস সম্পন্নের লক্ষ্যে এই কমিটি শীঘ্রই বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া ওরসের আগে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভক্তবৃন্দকে শৃঙ্খলার ও পবিত্রতা রক্ষা করে মাজারে আসা, অবস্থান করা ও ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান এবং ওরসের সময় মাজার এলাকায় সিজদা প্রদান ও মদ-গাঁজা সেবনসহ সকল অনৈসলামিক-অসামাজিক কাজ নিষিদ্ধমর্মে সাইনবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করার জন্য মাজার কমিটিকে বলা হয়েছে।