ইমরান সরকার :– স্বাস্থ্য ক্লিনিকে সার্জন সেজে নিয়মিত অপারেশন করেন ওয়ার্ড বয় মিজান।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আলোচিত ‘মা ক্লিনিক (ফাতেমা ক্লিনিক) গর্ভবতী লাকি বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সম্প্রতি এই ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের পর গর্ভবতি নিহত লাকি বেগমের পেটের ভেতর থেকে একটি কাঁচি উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চললেও শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হয়।
গোপন ক্যামেরায় ধারন করা একটি ছবি তে দেখায়ায়, অপারেশন টেবিলে ডাক্তারের পোশাক পরিহিত সেই ভুয়া সার্জন মিজান কে। তার সাথে সহকারী হিসেবেও যিনি রয়েছেন তার পরিচয় জানা না গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ভুয়া সার্জনের মত সহকারির ও নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি। এই ক্লিনিকে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন পরিচালনা করে আসছিলেন এই ওয়ার্ড বয় মিজান ওরফে কসাই মিজান।
এই মিজানের বাড়ি রংপুরে হবার সুবাদে রংপুর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করেছেন দির্ঘদিন। পরে সেখান থেকে পীরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালেও দীর্ঘদিন ওর্য়াড বয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
ক্লিনিক এবং হাসপাতালের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেই নিজেকে ডাক্তার হিসেবে জাহির করতে থাকেন। পরবর্তিতে ডাক্তার থেকে সার্জন সাজেন।
এরপর পলাশবাড়ে কসাই ক্লিনিক খ্যাত মা ক্লিনিকের মালিক ফাতেমার সাথে আতাত করে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে নিয়মিত সিজারিযান অপারেশন করে আসছিলেন এই ওর্য়াড বয় মিজান।
স্থানীয় সূত্র জানাযায়, ফাতেমা একজন সরকারি হাসপাতালের নার্স হলেও তার নিজের ক্লিনিকে নিয়মিত অবৈধভাবে সিজার পরিচালনা করে থাকেন। তার ভাই ও এক সময় নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের অপারেশন করতেন এবং সেসময় ও একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিলো।
এ ক্লিনিকেই গত দুই মাসে আর ও দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃতদের একজনের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ৭ নং ইদিলপুর ইউনিয়নের কুঞ্জমহিপুর গ্রামে এবং অন্যজনের বাড়ি মাদারহাটে।
স্থানিয়দের অভিযোগ, দালালচক্রের মাধ্যমে গর্ভবতী নারীদের জোর করে ক্লিনিকে আনা হয় এবং বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে সিজার করানো হয়। যে কারনে এখানে অপচিকিৎসায় অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন।
আরো জানা যায় ফ্যাসিবাদের দোসর কতিপয় নেতার অবৈধ টাকায় অংশিদারিত্ব রয়েছে এই ক্লিনিকে, এবং সে কারনেই এই অবৈধ টাকার দাপটেই শংশ্লিষ্ট দপ্তর কে ম্যানেজ করেই চলে চলমান এমন সব কর্মকান্ড।
তবে সুধি সমাজের দাবি অতি দ্রুত এই ক্লিনিক সিলগালা করে মালিক পক্ষ এবং ভুয়া ডাক্তারের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করা।